ঢাকা, ৩০ কার্তিক (১৫ নভেম্বর): পাকিস্তানে ফের রাজনৈতিক অস্থিরতার ঘনঘটা; গণতন্ত্র হুমকির মুখে—এমন অভিযোগ তুলে দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। সংবিধান সংশোধন ও সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ ক্ষমতা বাড়ানোয় বিরোধী জোটের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাদের দাবি, পাকিস্তান আবারও সেনা শাসনের দিকে ধীরে ধীরে ধাবিত হচ্ছে।
সম্প্রতি পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে সংবিধানের ২৪৩ অনুচ্ছেদ সংশোধন বিল পাশ করেছে ক্ষমতাসীন শাহবাজ সরকার। বিল অনুযায়ী, সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদ থেকে আরও উচ্চ ক্ষমতার ‘চিফ অফ ডিফেন্স ফোর্সেস’ (CDF) পদে উন্নীত করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—দেশের ইতিহাসে এমন পদ আগে কখনো ছিল না। নতুন পদটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিশেষ আইনি রক্ষাকবচ, যা ভবিষ্যতে সেনা প্রধানের বিরুদ্ধে যেকোনো আইনি প্রক্রিয়া জটিল করে তুলবে।
এদিকে, আরেকটি নতুন বিলে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব করে সংবিধান সংক্রান্ত মামলাগুলো নতুন গঠিত সাংবিধানিক আদালতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আইন বিচার বিভাগের স্বশাসন ক্ষুণ্ন করবে এবং পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক কাঠামোর ওপর সরাসরি আঘাত হানবে।
এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করেই বিরোধী জোটের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর আলী খান, সাবেক স্পিকার আসাদ কাইজারসহ দলের শীর্ষ নেতারা। বৈঠক শেষে নেতারা জানান, বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ এবং পাকিস্তান গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হচ্ছে। বিচারব্যবস্থাকে ‘নিজ পায়ে দাঁড়ানোর’ আহ্বান জানিয়েছে পিটিআই নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট।
ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, আগামী শুক্রবারের বৈঠকের পর দেশজুড়ে যৌথ আন্দোলন ও বিক্ষোভের চূড়ান্ত কর্মসূচি প্রকাশ করা হবে। দলটির নেতাদের দাবি, শাহবাজ সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো গণতন্ত্রের গলা টিপে হত্যার শামিল।
শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের রাজনীতির এই নতুন সঙ্কট কোনদিকে গড়ায়, সেটিই এখন দেশ-বিদেশে নজর কাড়ছে।