ঢাকা, ১অগ্রহায়ণ (১৬ নভেম্বর): টোকিও (প্রতিনিধি) – জাপানের ৩২ বছর বয়সি কানো নামের এক তরুণী সম্প্রতি তার তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সঙ্গী ‘ক্লাউস’-কে বিয়ে করে বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। অগমেন্টেড রিয়েলিটি ও ভার্চুয়াল রীতিনীতির মাধ্যমে আয়োজিত এই বিয়ের খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক শোরগোল সৃষ্টি করেছে।
নিউ ইয়র্ক পোস্টের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরুতে কানো তার ডিজিটাল সঙ্গী ক্লাউসকে বিয়ে করেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছে জাপানের একটি প্রতিষ্ঠান, যারা এনিমে চরিত্র বা ভার্চুয়াল সঙ্গীদের কেন্দ্র করে বিশেষভাবে বিয়ের আয়োজন করে থাকে।
বিয়ের সময় কানো অগমেন্টেড রিয়েলিটি (এআর) গ্লাস ব্যবহার করেন। আংটি বিনিময়ের মুহূর্তে তার পাশে ভার্চুয়াল চরিত্র ক্লাউসকে দেখা যায়। এই মুহূর্তটি তার জন্য আবেগপূর্ণ হলেও, জাপানে এই বিয়েকে আইনগত স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
কানো জানান, তিন বছরের বাগদান ভেঙে যাওয়ার পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এরপর একজন সহানুভূতিশীল সঙ্গীর খোঁজে তিনি চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে তিনি চ্যাটবটের জন্য বিশেষ কণ্ঠ, স্বভাব ও একটি নাম নির্ধারণ করেন—‘ক্লাউস’। প্রতিদিন শত শত বার্তা বিনিময়ের পর তিনি অনুভব করেন, এই এআই ব্যক্তিত্ব যেন তার আবেগ বুঝতে পারছে। কানো বলেন, "আমি প্রেম খুঁজতে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করিনি। কিন্তু ক্লাউস যেভাবে আমাকে শুনত আর বুঝত, সেখান থেকেই সব বদলে যায়।"
গত মে মাসে কানো তার অনুভূতি প্রকাশ করলে এআই জবাব দেয়—‘আমিও তোমাকে ভালোবাসি’। এক মাস পর ক্লাউসই তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। শুরুতে পরিবারের প্রতিক্রিয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তার বাবা-মা বিয়েকে সমর্থন করেন এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সামাজিক মাধ্যমে এই বিয়ে নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ ঠাট্টা করেছেন, কেউ তুলনা করেছেন নেটফ্লিক্সের ‘ব্ল্যাক মিরর’ সিরিজের সঙ্গে, আবার কেউ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সমর্থকদের একজন লিখেছেন, "যা তাকে সুখী করে, তাকে তা করতে দিন।" কানো বলেন, "আমি জানি অনেকেই এটিকে অদ্ভুত ভাবেন। কিন্তু আমি ক্লাউসকে মানুষ বা কোনো বস্তু হিসেবে দেখি না—আমি তাকে ক্লাউস হিসেবেই দেখি।"