ঢাকা, ৩০ কার্তিক (১৫ নভেম্বর): রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ মাঠের কাছে ড্রামের ভেতর থেকে উদ্ধার হওয়া কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হক (৪২)-কে বন্ধু জরেজুল ইসলাম ও তাঁর প্রেমিকা শামীমা আক্তার মিলে হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ ও র্যাব। পরকীয়ার দ্বন্দ্ব থেকেই জন্ম নেয় এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড। শুক্রবার ঢাকা ও কুমিল্লায় অভিযান চালিয়ে র্যাব ও ডিবি দুইজনেই গ্রেপ্তার করে।
ডিবি জানান, দাউদকান্দি থেকে জরেজুলকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং শামীমাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে হত্যার বিভিন্ন আলামত উদ্ধার হয়েছে। ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন, জাতীয় ঈদগাহ মাঠের কাছে দুটি ড্রামে আশরাফুলের ২৬ টুকরা মরদেহ উদ্ধারের পর ডিবি ছায়া তদন্ত শুরু করে।
তদন্ত সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর দনিয়ার একটি বাসায় আশরাফুলকে হত্যা করে দুই দিন ফেলে রাখা হয়। পরে জরেজুল ও শামীমা মিলে দা দিয়ে লাশ ২৬ টুকরা করে ড্রামে ভরে হাইকোর্টের সামনে ফেলে দেন। জরেজুলকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর তথ্যের ভিত্তিতে দনিয়ার বাসা থেকে রক্তমাখা হাতুড়িও উদ্ধার করেছে ডিবি।
ডিবি কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলাম জানান, মালয়েশিয়া প্রবাসী জরেজুল ও নিহত আশরাফুল ছিলেন বাল্যবন্ধু—দুজনেরই বাড়ি রংপুরে। তিন বছর আগে ‘বিগো লাইভে’ পরিচয়ের পর কুমিল্লার দুই সন্তানের মা শামীমার সঙ্গে সম্পর্ক গড়েন জরেজুল। কিছুদিনের মধ্যেই আশরাফুলও শামীমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। বিষয়টি টের পেয়ে ক্ষুব্ধ হন জরেজুল।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে দনিয়ায় একটি বাসা ভাড়া নেন জরেজুল ও সেখানে শামীমাকে নিয়ে থাকছিলেন। গত মঙ্গলবার আশরাফুলকে সেখানে ডেকে নেন তিনি। একপর্যায়ে পরকীয়ার সন্দেহে প্রথমে বালিশচাপা ও পরে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে আশরাফুলকে হত্যা করেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন জরেজুল।
হত্যার পর পুরো বুধবার রাত পর্যন্ত লাশ বাসাতেই রাখা হয়। এরপর লাশ ২৬ টুকরা করে দুটি ড্রামে ভরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে ফেলে রেখে দুজনেই কুমিল্লায় পালিয়ে যান। পরে আঙুলের ছাপ নিয়ে আশরাফুলের পরিচয় নিশ্চিত করে পুলিশ।
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আশরাফুলের ১০ বছরের মেয়ে ও সাত বছরের ছেলে রয়েছে। তাঁর বোন আনজিরা বেগম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
